আমার মা আমার পৃথিবী। মা হলো সফল রঙে রাঙিয়ে দেওয়া জীবনের প্রতিচ্ছবি। সন্তানের জন্ম থেকে ‘মা’ নিরলসভাবে কাজ করে যায় ভবিষ্যৎ গড়ে দেওয়ার দুর্নিবার এক প্রত্যয়ে। কখনো সে সফল হয়, কখনো নিদারুণ দুঃখের দুঃসহ কালো মেঘ এসে গ্রাস করে জীবনের গতিপথ। জীবনযুদ্ধে বারবার হোঁচট খেতে থাকে সন্তান। সন্তানের জীবনের এই যুদ্ধে কখনো পিছন থেকে মহিরুহের মতো, কখনো সামনে থেকে প্রবল বিক্রমে পথ দেখান ‘মা’। হেরে যেতে থাকা সন্তানের জীবনে নিজস্ব জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় আবারও করে তোলেন প্রাণবন্ত। সন্তানও বিমুগ্ধ নয়নে চেয়ে দেখে, তার ‘মা’ পাশে থাকলে এই পৃথিবীর কোনো কিছুই অসাধ্য নয়। মায়ের এই স্নেহময় সাহচর্যে নিজেকে ফিরে পায় সন্তান। পুনরায় ঝাঁপিয়ে পড়ে জীবন সংগ্রামে। একসময় গড়ে তোলে কাক্সিক্ষত জীবন। স্বপ্নের পাখিরা ডানা মেলে মুক্ত বিহঙ্গের মতো জীবনের আকাশে উড়তে থাকে সে। মায়ের দেখিয়ে দেওয়া পথ ধরে এগিয়ে যেতে থাকে গন্তব্যে। জীবন চলতে থাকে বহমান সময়ের মত নিরবচ্ছিন্ন। সময়ের চাকায় জং ধরে। যৌবনের নদীতে ভাটা পড়তে পড়তে একসময় শুকিয়ে যায় সব জলধি। শরীরের মধ্যে কঠিন কঠিন রোগ বাসা বাঁধে মায়ের। ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে ডাক্তার জানায় দুরারোগ্য ক্যান্সার বাসা বেঁধেছে শরীরে। মুহূর্তেই এলোমেলো হয়ে যায় সন্তানের পৃথিবী। ‘মা’ ছাড়া এই পৃথিবী ভাবতে পারে না সে। শেষমেশ ক্যান্সার জয় করতে পারলেও প্রকৃতির চিরাচরিত নিয়মে এই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেয় ‘মা’। জগতের সব প্রচেষ্টা শেষ হয়, মা চলে যান অনন্ত পরপারে। সুহাম অনুভব করে বিশাল বিস্তীর্ণ এই পৃথিবীর কোথাও তার জন্য ‘মা’ অপেক্ষা করে নেই। আজ আমি ‘মা’র জন্য অপেক্ষায় নেই। ‘মা’ ও আমার জন্য অপেক্ষায় নেই। যারা অপেক্ষায় থাকত তারা আজ আর নেই। জীবনের পথে হেঁটে হেঁটে চলে গেছে অনন্ত পরপারে। জীবন হয়তোবা এমনই। একসময় সবকিছুই হারিয়ে যায়, রেখে যায় স্মৃতির গগনে তোলপাড় করা কিছু সময়। ‘মা’কে ছাড়া জগৎ সংসার মিছে মনে হতে থাকে সন্তান সুহামের। এমনই এক মন কেমন করা গল্প নিয়ে রচিত এই উপন্যাস ‘মা’। বইটিতে রয়েছে কলোরেক্টাল ক্যান্সারসহ কয়েকটি বিশেষ রোগের ব্যাপারে কারণসহ প্রতিকার ও জনসচেতনতা।
Reviews
There are no reviews yet